বাগেরহাট জেলার চিতলমারী থানা এলাকার ডুমুরিয়া থনা এলাকায় এক ব্যক্তি মারা যাওয়ার পর তার লাশ নিয়ে চলছে নানা জল্পনা কল্পনা।
একই গ্রামের দীপালি মন্ডল নামের এক গৃহবধূর সঙ্গে ওই ব্যক্তির পরকীয়া সম্পর্ক ছিল-এমন অভিযোগে দুদিন হলো কেউ সৎকার করতে এগিয়ে আসেনি!
এই অভিযোগের মুখে দীপালির বারান্দায় অমূল্য মন্ডল নামের ওই ব্যক্তির লাশ পড়ে রয়েছে। পরিবারের অভিযোগ, তাকে কৌশলে হত্যা করা হয়েছে।
এ ঘটনায় দীপালির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন করেছে এলাকার একাংশ। তবে দীপালির দাবি, চিকিৎসাধীন অবস্থায় অমূল্যর মৃত্যু হয়েছে। এখানে তার কোনো হাত নেই।
চিতলমারী উপজেলার ডুমুরিয়া গ্রামের মৃত অনন্ত মন্ডলের ছেলে অমূল্য মন্ডলের সঙ্গে প্রতিবেশী নির্মল বিশ্বাসের স্ত্রী দিপালী মন্ডলের এই পরকীয়ার সম্পর্ক নিয়ে আগে থেকেই এলাকায় নানা আলোচনা ছিল। অমূল্যর পরিবারের দাবি, দীপালী রানী নির্মলের বাড়িতে নিয়মিত আসা-যাওয়া করতেন। এ কারণে অমূল্য মন্ডলের সংসারে অশান্তি দেখা দেয়। এ বিষয়ে কয়েকবার শালিশবৈঠক
করা হলেও তাদের ফেরানো সম্ভব হয়নি।
চারদিন আগে অমূল্য মন্ডল অসুস্থ হয়ে পড়লে ‘প্রেমিকা’ দীপালী মন্ডল তাকে চিতলমারী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এনে ভর্তি করেন। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। খুলনা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১৪ আগস্ট শনিবার বিকাল ৬টায় অমূল্য মন্ডল মারা যান।
এ মৃত্যুকে ঘিরে এলাকায় নানা গুঞ্জন শুরু হয়। মৃত অমূল্য মন্ডলের পরিবারের দাবি, সম্পত্তির লোভে প্রেমিকা দীপালী তাকে হাসপাতালে নিয়ে কৌশলে হত্যা করেছে। লাশ বাড়িতে পৌঁছালে পরিবারের লোক সেটি গ্রহণ না করায় দুইদিন ধরে অমূল্যর মৃতদেহ প্রেমিকা দীপালীর বারান্দায় পড়ে আছে!
অমূল্যর মৃত্যুর জন্য দীপালীকে দায়ী করে রবিবার সকাল ১১টায় ডুমুরিয়া এলাকায় রাস্তায় দাঁড়িয়ে সাধারণ মানুষ মানববন্ধন করেন।
মৃত অমূল্য মন্ডলের বোন মালতী গাইনের দাবি, ১৫ বছর ধরে অমূল্যর সাথে দীপালীর পরকীয়া সম্পর্ক। সম্পর্কের কারণে অমূল্যর সংসার ভেঙেছে। তিন বার বিয়ে দেওয়া হলেও দীপালীর পরকীয়ার কারণে সংসার বেশিদিন টেকেনি।
অমূল্যর প্রায় ১৫ বিঘা সম্পত্তি রয়েছে। সমস্ত সম্পত্তি দীপালী কৌশলে তার নামে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি করে নিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন। সম্পত্তির জন্য কৌশলে হত্যা করা হয়েছে বলে তার দাবি।
দীপালী মন্ডলের সাথে কথা বলতে তার বাড়িতে গেলে সাংবাদিকদের দেখে তিনি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। অনেক অনুরোধের পর তার সাথে কথা হয়।
অমূল্য হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছেন বলে তিনি জানান। তার লাশ কেউ গ্রহণ না করায় তার বাড়িতে এনে রেখেছেন। তার কোনো সম্পত্তি তিনি পাওয়ার অব অ্যাটর্নি করে নেননি বলেও দাবি করেন। তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেন।
চিতলমারী থানার ওসি এ এইস এম কামরুজ্জামান বলেন, ‘অমূল্য মন্ডল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে বলে জানতে পেরেছি। তবে এ ব্যাপারে থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এই নিয়ে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।