টাঙ্গাইলে আওয়ামী লীগ নেতা মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলায় আসামী সাবেক পৌর মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তির জামিন আবেদন আবারও নামঞ্জুর করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার টাঙ্গাইলের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মাসুদ পারভেজ শুনানি শেষে জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। এ নিয়ে টানা ১২ বারের মতো মুক্তির জামিন আবেদন নাঞ্জুর হলো।
এদিকে করোনার কারণে আদালতের সমন দিতে বিলম্ব হওয়ায় এ মামলার প্রথম আইও আবু ওবায়দা এবং কন্সটেবল মামুনুর রশিদের জেরা অনুষ্ঠিত হয়নি। পরে আদালতের বিচারক স্বাক্ষ্য গ্রহণের জন্য পরবর্তী তারিখ ৬ সেপ্টেম্বর নির্ধারণ করেন।
টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত সরকারি কৌসুলি মনিরুল ইসলাম খান বলেন, সম্প্রতি এ মামলার প্রথম আইও আবু ওবায়দা এবং কন্সটেবল মামুনুর রশিদের স্বাক্ষ্য অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু তাদের জেরা হয়নি। পরবর্তীতে সোমবার আদালত জেরার জন্য মঙ্গলবার সমন জারি করেন। কিন্তু সমন দিতে বিলম্ব হওয়ায় আবু ওবায়দা এবং মামুনুর রশিদ আদালতে উপস্থিত না হওয়ায় তাদের জেরা অনুষ্ঠিত হয়নি। এদিকে এ হত্যা মামলায় অন্যতম আসামী সহিদুর রহমান খানের মুক্তির জামিন আবেদন করা হয়। দীর্ঘ শুনানি শেষে আদালতের বিচারক তার জামিন আবেদন না-মঞ্জুর করেন। এ মামলায় গত বছরের ২ ডিসেম্বর আত্মসমর্পণের পর আদালত মুক্তির জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। তখন থেকেই সহিদুর রহমান খান মুক্তি কারাগারে রয়েছেন।
তিনি আরো বলেন, এ হত্যা মামলায় এখন পর্যন্ত ২৫ জন স্বাক্ষ্য দিয়েছেন। আগামী ৬ সেপ্টেম্বর সাক্ষ্যগ্রহণের পরবর্তী দিন ধার্য করেছেন আদালত। এদিন ম্যাজিস্ট্রেট শিউলি রানী দাস ও আবু ওবায়দা এবং মামুনুর রশিদের জেরা অনুষ্ঠিত হবে।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি রাতে টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ফারুক আহমেদের গুলিবিদ্ধ লাশ তার কলেজপাড়া এলাকার বাসার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়। ঘটনার তিনদিন পর তার স্ত্রী নাহার আহমেদ বাদি হয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামী করে মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে গোয়েন্দা পুলিশ রাজা ও মোহাম্মদ আলী নামক দুইজনকে ২০১৪ সালের গ্রেপ্তার করে। ওই দুই আসামীর জবানবন্দিতে এই চাঞ্চল্যকর হত্যার সঙ্গে টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের তৎকালিন সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানা এবং তার অপর তিন ভাই পৌরসভার তৎকালিন মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি, ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান কাকন ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পার জড়িত থাকার বিষয়টি বের হয়ে আসে।
তার পরেই আমানুর রহমান ও তার ভাইয়েরা আত্মগোপনে চলে যান। ২২ মাস পলাতক থাকার পর আমানুর রহমান আদালতে আত্মসমর্পন করেন। আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। প্রায় দুই বছর হাজতে থাকার পর তিনি জামিনে মুক্ত হন।