চলমান আইনের পাশাপাশি পবিত্র কোরআন শরীফ ছুঁয়ে শপথ ও লিখিত দিয়ে সুন্দরবনের আত্মস্বীকৃত ৯ জন হরিণ শিকারী আত্মসমর্পণ করেছে।
গত ১৬/০৮/২০২১ খ্রিষ্টাব্দ সোমবার সকালে পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জ কর্মকর্তার কাছে এসে তারা আত্নসমর্পণ করে। কে বা কারা তাদেরকে এই বুদ্ধি পরামর্শ দেয় তা জানা যায়নি।
চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক মোঃ এনামুল হক এর কাছ থেকে জানা যায় যে, আত্মসমর্পণকারী হরিণ শিকারীরা হলেন মহিদুল শেখ (৩০), রেজাউল শেখ (৩৫), জাহাঙ্গীর মোল্যা (৩০), বাচ্চু মৌছাল্লি (৩৫), আতাউর খাঁন (৩৫), রুবেল শেখ (২৮) ও ফরিদ জোমাদ্দার (৩৮) সাজ্জাক ব্যাপারি (২৫), এমদাদুল সরদার (২৮), তাদের বাড়ী উপজেলার সুন্দরবন ও চিলা ইউনিয়নে।
বন কর্মকর্তা মোঃ এনামুল হক আরো জানান আত্মসমর্পণকারীরা দীর্ঘদিন সুন্দরবনে অবৈধ অনুপ্রবেশ করে ফাঁস ও সনাতনী পদ্ধতিতে হরিণ শিকারের পাশাপাশি কীটনাশক/বিষ দিয়ে মাছও শিকার করতো। কাহারো কোন প্ররোচনা ব্যাতিত স্বইচ্ছায় তারা ১৬/০৮/২০২১ খ্রিস্টাব্দ, সোমবার চাঁদপাই রেঞ্জ অফিসে এসে ৩শ টাকার ষ্ট্যাম্পে লিখিত সদাচরণের মুচলেকা দিয়ে পাশাপাশি পবিত্র কোরআন শরীফ স্পর্শ করে এসব বন আইনের অপরাধে আর জড়িত হবেন না বলে অঙ্গিকারবদ্ধ হন।
এর তিন মাস আগে আরও ১৮ হরিণ শিকারী আত্মসমর্পণ করে বলেও জানান এনামুল হক।
তবে একাধিক সুত্রে জানা যায় যে বৈধ অবৈধ বন্দুকধারী চোরা হরিণ শিকারীরা কখনোই অদ্যাবধি স্বইচ্ছায় স্বপ্রণোদিত হয়ে কখনোই আত্মসমর্পণ করে নাই। তারা মাঝেমধ্যে হরিণে গোশত চামড়া ও শিকারে ব্যবহৃত বন্দুক সহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষা কারী বাহীনির হাতে ধরা পড়ে। একইরুপ স্বপ্রণোদিত হয়ে তাদেরও আত্মসমর্পণ করাতে পারলে সুন্দরবনের বাঘ হরিণ সহ জীববৈচিত্র্যের জন্যে ভালো হতো। এর জন্যে চাই ফলপ্রসূ সামাজিক আন্দোলন। কেউ হরিণের গোশত খেতে বললে যেন বলি ওটা বাঘের খাদ্য, আমি মানুষ আমার জন্যে অনেক খাবার আছে।
হরিণ শিকারীরা আত্মসমর্পণের সময় সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের স্টেশন কর্মকর্তা মোঃ ওবায়দুর রহমান, চাঁদপাই রেঞ্জের সহ-ব্যবস্থাপনা সংগঠন সিএমসির বর্তমান আহবায়ক ও সাবেক চিলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ শফিকুল ইসলাম রাসেল, ইউপি সদস্য অলিয়ার রহমান সরদার ও বনকর্মী মিজানুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
কোরআন শরীফ স্পর্শ করে আত্মসমর্পণ বিষয়টি এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।